বাংলাদেশের অন্যতম শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে চার হাজার অসহায় শীতার্তের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। বসুন্ধরা গ্রুপের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বসুন্ধরা শুভসংঘ, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলা শাখার স্বেচ্ছাসেবীরা ১২টি স্থানে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। গত ১৮ জানুয়ারি প্রথম দিন সকাল থেকে দিনব্যাপী তিন উপজেলায় এক হাজার ২০০ কম্বল বিতরণ করা হয়। হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডায় অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারগুলো গরম কম্বল পেয়ে খুশিতে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
কম্বল পেয়ে খুশিতে রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরে ৭০ বছরের বৃদ্ধা ফরিদা বেগম বলেন, ‘কদিন ধইরা অনেক শীত পড়চে। ঘরে গরম কোন কাপড়চোপড় নাই, একখান কম্বলও নাই। আইজ আবার বিস্টি নামচে। অনেক শীত, আইজ আপনারা একখানা কম্বল দিলেন, খুব আনন্দ লাগতাচে।
আল্লার কাচে দোয়া করি, আল্লায় যেন আপনাগো আরো বেশি বেশি দান করার তওফিক দেন।’ ফরিদার মতো কালকিনি উপজেলার রাজদী গ্রামের প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ নূরু সরদার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে খুব শীত পড়ছে। সাত দিন ধইরা সূর্যের দেখা নাই, এমন অবস্থা কয়দিন থাকে আল্লায় জানে। শীতবস্ত্রের অভাবে খুব কষ্ট করতে হয়।
দিনে যেমন তেমন, রাইতে ঠাণ্ডায় ঘুম আসে না। বউ-পোলাপান লইয়া কেমন থাকি? আইজ আপনারা একখানা কম্বল দিলেন, অনেক উপকার হইল। আমার মতন আরো কত মানুষ কষ্ট করতাছে।’
বসুন্ধরার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে মাদারীপুর জেলায়। এমন কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে বসুন্ধরা শুভসংঘ, মাদারীপুর জেলার স্বেচ্ছাসেবীরা জানান।
বৃহস্পতিবার রাজৈর উপজেলায় কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের অষ্টমবারের নির্বাচিত এমপি সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান ও রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপমা ফারিসা।
দ্বিতীয় দিন শুক্রবার ১৯ জানুয়ারি সদর উপজেলায় এক হাজার ৩০০ শীতার্তের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। তীব্র শীতে কম্বল পেয়ে তাদের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। শীতের কম্বল পেয়ে তরমুগরিয়া এলাকার তানজিলা আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী প্রতিবন্ধী, কোনো কাজ করতে পারে না। আমি মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঠিকা কাম করি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের বাড়ি কাম করতে হয়। যা টাকা পাই তা-ই দিয়ে সংসার চালাই। আমার একটা ছেলে আছে। আমাগো গরম কাপড় বলতে কিছুই নাই। ছিঁড়া ক্যাতা-কাপড় জড়াইয়া তিনজনে কোনো রকমে রাত কাটাই। আইজ আপনারা একটা কম্বল দিলেন, এতে খুবই উপকার হইল। এত দিন শুনছি বসুন্ধরার স্যারেরা মানুষের অনেক সাহায্য করে। আইজ তার পমান পাইলাম। আল্লায় আপনাগো আরো তফিক দিব গরিব মানুষগুলারে সাহায্য করার।’ প্রধান অতিথি ছিলেন মাদারীপুর পৌরসভার তিনবারের নির্বাচিত মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন মেয়রপত্নী জেরিন ফেরদৌস এ্যান্থনী ও বসুন্ধরা গ্রুপের সিনিয়র জিএম শহীদুর রহমান শাহীন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি ও আলহাজ আমিনউদ্দিন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আকমল হোসেন।
২০ জানুয়ারি শনিবার সকালে মাদারীপুর সদর, বিকেলে শরীয়তপুর জেলা সদর ও নড়িয়া উপজেলায় এক হাজার ৩০০ অসহায় ও শীতার্তের মাঝে গরম কম্বল বিতরণ করা হয়। এই দিন কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর-২ আসন থেকে আটবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খানের ছোট ছেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মাহাথির খান সামস। শরীয়তপুর জেলা সদরের ১২ বছর বয়সী শিশু সিয়াম সরদার বলে, ‘কম্বল পায়া ভালো লাগতাচে। আমার তো বাপ নাই। আমাগো ছাইর্যা চইল্যা গেচে। কিডা কিনা দিব কম্বল। এই শীতে ম্যালা কষ্ট করতেচি। মা মাইসেগো বাড়ি কাম করে, এহন আর শীতে কষ্ট অইব না, কম্বলখান নিয়্যা মারে দ্যাহামু।’ শরীয়তপুরে কম্বল বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাইফুদ্দিন গিয়াস, মজিদ-জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফরিদ আল হোসাইন। উদ্বৃত্ত ২০০ কম্বল মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে পথশিশু ও দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান ও তাঁর সহযোগীরা তিন দিনব্যাপী দুই জেলায় যে মানবিক কাজ করে গেলেন, তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।
বসুন্ধরা গ্রুপের বহুমুখী মানবিক কার্যক্রম শুধু মাদারীপুর, শরীয়তপুরেই নয়, তাদের এ কর্মকাণ্ড সারা দেশে সাধারণ ও দুস্থ মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বসুন্ধরা গ্রুপের মতো যদি দেশের অন্যান্য বিত্তবান মানুষ বা নামকরা প্রতিষ্ঠান মানবকল্যাণে এগিয়ে আসত, তাহলে সুবিধাবঞ্চিত হাজার হাজার মানুষের উপকার হতো। বসুন্ধরা গ্রুপ সর্বদাই সরকারকে নানাভাবে সহায়তা এবং দেশের অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করে আসছে। করোনাকালীন তারা মৃত্যুপথযাত্রীদের বাঁচাতে বৃহৎ হাসপাতাল নির্মাণ করে জনগণের সেবা করেছে।
শীতার্তদের মুখে হাসি
SOURCE : কালের কণ্ঠ
সৈয়দপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে গাছের চারা রোপণ
Tree Plantation Initiative by Bashundhara Shuvosangho in Saidpur
উপকূলের অসহায় নারীদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ
Bashundhara Group Stands by Vulnerable Women on the Coast
বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে উপকূলীয় দরিদ্র নারীদের প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন প্রদান
Bashundhara Group Provides Training and Sewing Machines to Poor Coastal Women
৫৩ লাখ টাকার সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের
Bashundhara Foundation Distributes Tk 5.3 Million in Interest-Free Loans
বসুন্ধরা গ্রুপের শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছে জাবির ১১৬ জন শিক্ষার্থী
Bashundhara Group Supports 116 JU Students with Scholarships