চার সন্তানের জননী রাশিদা আক্তারের স্বামী মো. দেলোয়ার হোসেন গ্রামের একটি মসজিদের ইমাম হিসেবে চাকরি করতেন। মাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতন পেতেন। আত্মীয়দের সহযোগিতা নিয়ে প্রতিবন্ধী এক সন্তানের চিকিৎসাসহ তিন মেয়ের লেখাপড়া চালিয়েছেন। স্বামীর চাকরি চলে গেছে প্রায় ছয় মাস হলো।
বাড়ির ভিটা ছাড়া জমিজমা নেই। একেবারেই অসচ্ছল পরিবার। পরিবারের হাল ধরতে সেলাই মেশিন চালানো ও কাপড় কাটার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন রাশিদা আক্তার, কিন্তু সেলাই মেশিন ক্রয়ের সামর্থ্য নেই। একটি সেলাই মেশিন ছিল তাঁর কাছে স্বপ্নের মতো।
তাঁর সেই স্বপ্নপূরণে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। বিনা মূল্যে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে সেলাই মেশিন পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে রাশিদার দুই চোখে টলমল করছিল পানি। ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের দেওগাও শিববাড়ী গ্রামের রাশিদার মতো এমন অসহায় ৬০ নারীর হাতে সেলাই মেশিন তুলে দিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় ময়মনসিংহের নান্দাইল, ত্রিশাল, ফুলবাড়িয়া এবং সুনামগঞ্জের মধ্যনগরের হাওরবেষ্টিত খেটে খাওয়া নারীদের হাতে এই সেলাই মেশিন তুলে দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি তিনটি উপজেলায় তিন দিনের আয়োজনের মাধ্যমে এই সেলাই মেশিনগুলো তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের ইচাইল গ্রামের শিরিনা আক্তারের স্বামী রাসেল মিয়া ২০১৮ সালে মারা গেছেন। তিন শিশুসন্তান নিয়ে তাঁর সংসার। বাড়ির জায়গাটুকু ছাড়া আর কোনো জমি নেই।
অভাব-অনটনের সংসার। আয়-রোজগার করার কেউ নেই। সন্তানদের মুখে খাবার দিতে গাজীপুরের কোনাবাড়ী একটি গার্মেন্টসে শ্রমিকের কাজ নেন। শিশুরা মাকে না পেয়ে কান্নাকাটি করে। ছয় মাস কাজ করে চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে আসেন। দুই ছেলের মধ্যে আদম আলী একটি মাদরাসায় হাফেজি পড়ে, আরেক ছেলে ইমান আলী পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। আরেক ছেলের বয়স ছয় বছর। প্রতিবেশীদের সহযেগিতায় দুই ছেলের লেখাপড়া চালাতে পারলেও অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে পরিবারটির। বিনা মূল্যে বসুন্ধরা শুভসংঘের সেলাই মেশিন হাতে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হতে দেখা যায় শিরিনাকে।
দূর-দূরান্ত থেকে আসা সবাইকে সেলাই মেশিন দেওয়ার পর বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে তাঁদের হাতে যাতায়াত ভাড়াও দিয়ে দেন বসুন্ধরা শুভসংঘের বন্ধুরা। বিনা মূল্যে সেলাই মেশিন ও যাতায়াত ভাড়া পাওয়ায় তাঁরা আরো আনন্দিত হন। অতিথিরা বলেন, শুভসংঘের মাধ্যমে এই সেলাই মেশিন উপহার হিসেবে বিতরণ, এটি আসলে দুই দিক থেকে ভালো উদ্যোগ। যাঁরা এটির সঙ্গে জড়িত, তাঁরা ভালো কাজে অনুপ্রেরণা পাওয়ার পাশাপাশি যাঁরা সহায়তা পেলেন, তাঁদের এটি আয়ের একটি উৎস তৈরি হলো। একটি মেশিন দিয়ে একটি পরিবারের চলা সম্ভব। সেলাই মেশিন নিয়ে অসচ্ছল পরিবারের নারীরা যেন সচ্ছলতার স্বপ্ন নিয়ে আনন্দে বাড়ি ফিরে যাবেন। একেকটি সেলাই মেশিন একেকটি পরিবারের সচ্ছলতার চাকা। পরিবারের কাজ ও লেখাপড়ার ফাঁকে প্রতিদিন একটি সেলাই মেশিন দিয়ে সালোয়ার-কামিজ, পেডিকোট, মেক্সি, শিশুদের প্যান্ট, ব্লাউজ তৈরি করে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় করা সম্ভব প্রত্যেকের। এসব টাকায় তাঁরা সংসার ও নিজেদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে নিতে পারবেন। সেলাই মেশিনের চাকায় ঘুরতে পারে তাঁদের ভ্যাগের চাকা। সেলাই মেশিন ক্রয় করার মতো সামর্থ্য এখানে কারো নেই। তাঁদের কাছে একটি সেলাই মেশিন ছিল স্বপ্নের মতো। সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বসুন্ধরা শুভসংঘ বিনা মূল্যে তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছে একটি করে সেলাই মেশিন। এখন এই সেলাই মেশিন দিয়ে তাঁরা কাজ করে পরিবারের অনেককটা অভাব ঘোচাবেন। সুই-সুতায় স্বপ্ন বুনবেন।
SOURCE : বাংলাদেশ প্রতিদিনসৈয়দপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে গাছের চারা রোপণ
Tree Plantation Initiative by Bashundhara Shuvosangho in Saidpur
উপকূলের অসহায় নারীদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ
Bashundhara Group Stands by Vulnerable Women on the Coast
বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে উপকূলীয় দরিদ্র নারীদের প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন প্রদান
Bashundhara Group Provides Training and Sewing Machines to Poor Coastal Women
৫৩ লাখ টাকার সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের
Bashundhara Foundation Distributes Tk 5.3 Million in Interest-Free Loans
বসুন্ধরা গ্রুপের শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছে জাবির ১১৬ জন শিক্ষার্থী
Bashundhara Group Supports 116 JU Students with Scholarships