দেশে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এ রোগে আক্রান্ত ও সন্দেহভাজনেরা চিকিৎসা পাচ্ছেন হাতে গোনা কয়েকটি হাসপাতালে। এমন অবস্থায় রোগটি মহামারি আকারে ছড়ালে কী হবে তা অকল্পনীয়। এমন প্রেক্ষাপটে সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে এগিয়ে এসেছে দুই শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ ও ফর্টিস গ্রুপ। প্রতিষ্ঠান দুটি করোনা রোগীদের চিকিৎসায় অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণের জন্য বিনা মূল্যে অবকাঠামো সুবিধা দিতে চাইছে, সরকারের পক্ষ থেকে শুধু চিকিৎসা সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা করতে হবে।
দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বসুন্ধরা অবকাঠামো সুবিধা দেওয়ার জন্য তাদের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিকে চিহ্নিত করেছে। প্রায় ৬৪ বিঘা জমিতে গড়ে ওঠা এই কনভেনশন সিটিকে অস্থায়ী হাসপাতালে রূপান্তর করতে পারলে এখানে একসঙ্গে পাঁচ হাজার রোগীর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। অন্যদিকে ফর্টিস অবকাঠামো আপাতত ১০০ শয্যার রয়েছে, তবে সরকার চাইলে তারা এটি আরও কয়েকগুণ বাড়াতে পারবে।
বসুন্ধরার কনভেনশন সিটি ৩০০ ফুট সড়কের পাশে অবস্থিত। এলাকাটি ঘুরে দেখা গেছে, এখানে সুবিশাল চারটি হল ও একটি এক্সপো সেন্টার আছে। আছে রান্না, পানি, বিদ্যুৎ, জেনারেটরসহ অন্যান্য সুবিধাও। হল ও এক্সপো সেন্টারের মোট আয়তন প্রায় দুই লাখ ৪০ হাজার বর্গফুট। এই পুরো জায়গাটি করোনা চিকিৎসায় অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ছেড়ে দিতে চায় দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে তাদের এই স্থাপনা হাসপাতাল হিসেবে রূপান্তরের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এটি অস্থায়ী হাসপাতালে রূপান্তর করতে পারলে সরকারের বিপুল অর্থের সাশ্রয় হবে।
বসুন্ধরার আগ্রহের পর গত ৩০ ও ৩১ মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেল কোরের সদস্যরা এই এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
সায়েম সোবহান বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে আমরা অবকাঠামো নিয়ে প্রস্তুত আছি। মেডিকেল যন্ত্রপাতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সরবরাহ করা হলে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতাল চালু করা সম্ভব।’
এদিকে ফর্টিস গ্রুপের পক্ষ থেকে যে অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে সেটি ঢাকার বেড়াঈদে। গত বুধবার সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, করোনা রোগের চিকিৎসার জন্য অস্থায়ী এই হাসপাতালের স্থাপনার মধ্যে রয়েছে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত তিন তলা একটি ভবন। কেন্দ্রীয়ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই ভবনের প্রতিটি কক্ষেই আছে পৃথক শৌচাগার, বিছানা ও প্রয়োজনীয় আসবাব। এ ছাড়া ১৪টি তাঁবু টানিয়ে সেখানে চিকিৎসার জন্য থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাঁবুগুলোতেও থাকবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ও মেডিকেল বেড। পাশাপাশি বড় পরিসরের একটি মাঠও রয়েছে। প্রয়োজন হলে সেখানেও তাঁবু টানিয়ে দিতে চায় ফর্টিস গ্রুপ।
জানতে চাইলে ফর্টিস গ্রুপের উপ-মহাব্যবস্থাপক মঈনুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁবুগুলো ২০-৩০ বর্গফুট আয়তনের। ভবন ও তাঁবু মিলে আপাতত ১০০ জনের জন্য 'আইসোলেসন সেন্টার' প্রস্তুত করা হয়েছে।
এই অবকাঠামো ব্যবহারের জন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানান মঈনুল হোসেন। তিনি বলেন, কোনো হাসপাতাল চাইলে করোনা চিকিৎসায় এটি তাদের এক্সটেনশন হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।
বসুন্ধরা ও ফর্টিস গ্রুপের বিনা মূল্যে দেওয়া অবকাঠামো দিতে চাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে গত বৃহস্পতিবার যোগাযোগ করা হয়েছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে বিষয়টি জানানো হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে কি-না, তিনি তা জানেন না।
শিল্প প্রতিষ্ঠান আকিজ গ্রুপের পক্ষ থেকেও এমন একটি মানবিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি তেজগাঁও শিল্প এলাকায় তাদের নিজস্ব জমিতে ও নিজ খরচে ৩০০ শয্যার একটি হাসপাতাল তৈরি করতে চেয়েছিল। যেখানে বিনা মূল্যে করোনা রোগীদের চিকিৎসা করা যেত। চিকিৎসা সরঞ্জামাদিরও ব্যবস্থা করতে চেয়েছিল এই প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন তাতে বাধা দেয় ও হাসপাতালের জন্য নির্ধারিত জায়গায় ভাঙচুর করে। এতে উদ্যোগটি থমকে যায়।
গত বুধবার আকিজ গ্রুপের নির্ধারিত ওই জায়গায় গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে হাসপাতাল নির্মাণের কাজ হচ্ছে না। দায়িত্বরত নিরাপত্তা রক্ষীর কাছে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। হাসপাতাল নির্মাণের এই পরিকল্পনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
যোগাযোগ করা হলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, অজ্ঞাত কারণে হাসপাতালটি আর হচ্ছে না। তা ছাড়া বসুন্ধরা ঢাকায় ৫ হাজার শয্যার একটি অস্থায়ী হাসপাতাল করতে চাইছে। এমন অবস্থায় করানো চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আরও একটি হাসপাতাল নির্মাণের দরকার নেই।
SOURCE : প্রথম আলোসৈয়দপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে গাছের চারা রোপণ
Tree Plantation Initiative by Bashundhara Shuvosangho in Saidpur
উপকূলের অসহায় নারীদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ
Bashundhara Group Stands by Vulnerable Women on the Coast
বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে উপকূলীয় দরিদ্র নারীদের প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন প্রদান
Bashundhara Group Provides Training and Sewing Machines to Poor Coastal Women
৫৩ লাখ টাকার সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের
Bashundhara Foundation Distributes Tk 5.3 Million in Interest-Free Loans
বসুন্ধরা গ্রুপের শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছে জাবির ১১৬ জন শিক্ষার্থী
Bashundhara Group Supports 116 JU Students with Scholarships